মওদুদের জানাজার আগে যা বললেন ফখরুল

মওদুদের জানাজার আগে যা বললেন ফখরুল

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদ্য প্রয়াত সদস্য মওদুদ আহমদের মরদেহ সকাল ১১টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে নেওয়া হবে, পূর্বঘোষিত এমন খবরে সকাল থেকেই ওই এলাকায় নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন।

নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রিয় নেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে কার্যালয়ের সামনের সড়ক কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠে। ১১টার কিছু পর যখন বিএনপির এই নেতার মরদেহবাহী কফিন দলের রাজনৈতিক আঁতুড়ঘরে নিয়ে আসা হলে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি।

এ সময় দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মীর জানাজার আগ মুহূর্তে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আবেগাপ্লুত হয়ে ফখরুল বলেন, ‘ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ একজন অভিভাবক ছিলেন।

তার এ মৃত্যু জাতির বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। যখন আমরা এক রাজনৈতিক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছি, তখন তার শূন্যতা আরও বেশি অনুভব করব। আজকে যারা শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন তারাসহ সবাই আল্লাহর কাছে দোয়া করব, তার সব গুনাহ মাফ করে তাকে যাতে বেহেশত নসিব করেন।

তিনি বলেন, আমরা আজ এমন একজনের জানাজায় শরিক হয়েছি, যিনি ছাত্রজীবন থেকে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত লেখক, আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ। আজ তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি শুধু রাজনীতিক ছিলেন না, রাজনীতিক কিংবদন্তি ছিলেন। তার এই চলে যাওয়া শুধু বিএনপির জন্য নয়, সমগ্র দেশ ও জাতির জন্য অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি করল।

পরে, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মির্জা ফখরুল। এ সময় তার মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। সেখানে প্রবাসীরা তার প্রথম জানাজায় অংশ নেন। পরে মওদুদের মরদেহ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা ৩ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। সেখানে মির্জা ফখরুলসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা লাশ গ্রহণ করেন। এরপর সন্ধ্যায় মরদেহ নেওয়া হয় তার গুলশানের বাড়িতে। 

শুক্রবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে মওদুদ আহমদের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়। সকাল ১০টা পর্যন্ত মরহুমের মরদেহ রাখা হয় সেখানে।

শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপির নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বিভিন্ন দল ও সংগঠন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মওদুদ আহমদের মরদেহ নেওয়া হয় তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল সুপ্রিমকোর্টে প্রাঙ্গণে।

সেখান থেকে নয়াপল্টন কার্যালয়ে তার লাশ নেওয়া হয়। সেখান থেকে জানাজা শেষে লাশ নেওয়া হয় নোয়াখালীতে। বাদ জুমা কবিরহাট সরকারি কলেজ মাঠ ও বিকেল ৪টায় কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট সরকারি মুজিব কলেজ মাঠে দুটি জানাজা হবে। কোম্পানীগঞ্জের মানিকপুরে শেষ জানাজার পর তাকে সেখানেই দাফন করা হবে।

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ১৯৪০ সালের ২৪ মে ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মাওলানা মমতাজ উদ্দিন আহমদ এবং মা বেগম আম্বিয়া খাতুন। ছয় ভাইবোনের মধ্যে মওদুদ আহমদ চতুর্থ।

আপনি আরও পড়তে পারেন